Skip to main content

একই সুরে কত গান

বিষয়টা খুব একটা নতুন নয়।  যদিও বেশ আকর্ষণীয়।  গান আমরা প্রায় সকলেই শুনি।  এবং এও জানি যে এমন গান আছে যা শুনলে হঠাৎ করে মনে হয় "আরে   এই গানটার  একটা হিন্দি আছে না?" বা " এই গানটার বাংলা টা  যেন কি?"  এবং এই গানগুলির বিষয়ে মানুষের এক-ধরণের স্বভাবজাত আকর্ষণ ও আছে।  তাই ভাবলাম দেখি কিছু লেখা যায় কিনা।  মজার ব্যাপার সব গান নিয়ে লেখা খুব একটা সহজ নয়।  তবুও চেষ্টা করে দেখতে গেলে ক্ষতি কি।
    প্রথমেই আসা যাক সলিল চৌধুরীর গান -এ।  তিনিই এই কাজ প্রথম শুরু করেন বলেই মনে হয়।  না ভুল হলো তার আগে শচীন কর্তাও আছেন।  তবে আগে সলিল চৌধুরীকে  নিয়েই হোক।  লতাজিকে দিয়ে তিনি ৩৫টি বাংলা  আধুনিক  গান গাইয়ে  ছিলেন।  যার ২৯ খানারই অন্য ভার্সন আছে।  ১৯৫৯ সালে প্রকাশিত "যারে যারে উড়ে যারে পাখি " গানটির  হিন্দি  ছিল ১৯৬১ সালে প্রকাশিত "মায়া" হিন্দি ছবির " যারে যারে উড় যারে পঞ্চী " . "যারে যারে উড়ে যারে পাখি " এর উল্টো দিকে ছিল " না যেও না" যার হিন্দি ছিল ১৯৬০ সালে প্রকাশিত হিন্দি ছবি পরখ এর "ও সজনা , বরখা বাহার আয়ি ".
   এছাড়া ১৯৬০ সালে প্রকাশিত আরো দুটি বাংলা  গান "ও বাঁশি কেন হায়  " আর "ওগো আর কিছু তো নয় " হিন্দিতে হয়েছিলো  ১৯৬০ সালে পরখ এর "ও বন্সি হায় " এবং ১৯৬১ সালের "মায়া " ছায়াছবিতে "তসবির তেরি দিল মে" (লতা/রফি) . মজার ব্যাপার হলো ১৯৬১ সালের " সাত ভাই চম্পা" মারাঠি তে হয় ১৯৬৫ সালে "প্রীত খুলে মাঝি" (সোনবাই ১৯৬৫) এবং হিন্দিতে হয় ১৯৭২ সালের "মেরে ভাইয়া " ছবিতে "পিয়াস লিয়ে মানব হামারা যে তরসে " . তালিকা দিলে শেষ  হবে না , আমরা আজ আরো একজন গায়ক কে নিয়ে আলোচনা করে বিদায় নেবো আপনাদের কমেন্টের আশায়।  ভালো লাগলে আবার লিখবো।

সেই গায়ক হলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়।  যিনি সলিল চৌধুরীর সুরে একাদিক্রমে  ২৬ খানা বাংলা আধুনিক গান গেয়েছেন।  যার ১৫টার অন্য ভার্শন পাওয়া যায়।যেমন গায়ের বধূ (১৯৪৯) এর মালায়ালাম ছিল  দেবদাসী (১৯৭৮) সালে যেসু দেশে কণ্ঠে (অরুনাল) . আবার ১৯৫২ সালের "ও মাঝি ভাইও" গানটি "থুড়ত্তু ইদি মুজাক্কাম" নামের তামিল ফিল্মে (১৯৮০) এস পি বালাসুব্রাহ্মনিয়ম ও পি সুশীলা গেয়েছিলেন "ভালই এন্ডি কোলভাম" বলে।  ধিতাং ধিতাং বলে গানটির হিন্দি গেয়েছিলেন ১৯৫৬ সালে লতাজি আওয়াজ ফিল্মে আর মালয়ালম ফিল্মে ১৯৭৫ সালে পি সুশীলা ও পি জয়চন্দ্রণ।  ফিল্মের নাম নীলাপনমান।  গান ছিল " থাইয়াম থাইয়াম ".  আবার দুরন্ত ঘূর্ণির হিন্দি ছিল ছায়াতে (১৯৬১) "দিল সে  দিল কি"(লতা /মুকেশ) আর মালয়ালম ছিল পুঠিয়া ভেলিচ্চন এ (১৯৭৯) " আরেট্টু কাদাবিল"(জয়চন্দ্রন) . আনন্দের 'কাহি দূর জব দিন ঢল যায় " (মুকেশ) নিশ্চই কেউ ভোলেননি? বাংলাটাও সবাই জানেন "আমায় প্রশ্ন করে"(হেমন্ত) . আচ্ছা 'মেরে আপনে ' ফিল্ম মনে আছে ? 'কোই হোতা জিসকো আপনা ' বলে কিশোরকুমারের গানটা ?  জানেন বাংলা ভার্সন টা হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের "যেতে যেতে পথ ভুলেছি"(১৯৮২) . আরো অনেক গান আছে।  আছে আরো গায়ক গায়িকা।  যদি আপনাদের  ভালো লাগে আবার লিখবো। 
                                                              সুমিত গাঙ্গুলী 

Comments

  1. বেশ তথ্যসমৃদ্ধ ও আকর্ষণীয় লেখনী।

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

আমার বাবা - আমার ছেলেবেলা

                                            দেখতে দেখতে তেইশটা বছর পেরিয়ে গেল – বাবাকে দেখিনি, গল্প করিনি, বাবার আদরের ছোঁয়া পাইনি…… বাবার কথা বলতে গিয়েই প্রথমে মনে পড়ে তাঁর মিষ্টি হাসিটা। আমার বাবা ছিলেন একেবারে মাটির মানুষ। আমার কখনো মনে পড়েনা যে বাবা আমাকে জোর গলায় কিছু বলেছেন বা বকেছেন। ছোটবেলায় আমি আর আমার বোন সঞ্চারী বাবার কাজ থেকে ফেরার অপেক্ষায় বসে থাকতাম – কেন না বাবা ফিরে এসে একটু বিশ্রাম নিয়ে আমাদের ভূতের গল্প শোনাবেন সেই আশায়! কী যে মজার দিন ছিল সেই সব... ছোটবেলায় আমার শখ ছিল পুতুল নিয়ে খেলার, খুব ভালবাসতাম। মনে পড়ে একবার বাবা আর মা বিদেশ থেকে ফেরার  সময় একটা Walkie Talkie Doll (পুতুল) নিয়ে এসেছিলেন। আমি  সেই পুতুলটিকে নিয়ে সারাদিন খেলতাম। একদিন একটি ছোট্ট বাচ্চা মেয়ে এসেছিল আমাদের বাড়িতে তার বাবামায়ের সাথে আর ওর –ও ঐ পুতুলটিকে খুব ভালো লেগে গেল। আমার নরম মনের বাবা আমাকে বললেন ‘মানা তুমি ওই বাচ্চাটিকে তোমার এই পুতুলটি দিয়ে দাও, আমি তোমাকে আবার...

আমরা তো হেমন্তই হতে চাইতাম

আজও বিকেলে মাঝে মাঝে খুব হেমন্ত শুনতে ইচ্ছে হয়..... "কোনোদিন বলাকারা এতো দূরে যেত কি "...... কিংবা "ওলির কথা শুনে বকুল হাসে ".......আজও মনে পরে "বিষ্ণুপ্রিয়া গো আমি চলে যাই ".......বা "সারাটি দিন ধরে / চেয়ে আছিস ওরে /তোর মনে কথা তবুও কেউ জানলো  না"......আকাশে মেঘ করলেই মনে পরে "মেঘের স্বপন দেখি "......শুধু একজনের জন্য।...... হেমন্ত মুখোপাধ্যায় । কখনো আবার বেশি রাতে আজও  শুনি বিবিধ ভারতীতে.... "তেরি দুনিয়া মে জিনিসে /তো বেহতর হ্যায় / কে মর যায়ে ".....আর সাথে যদি হয় 'ছুঁপালো যুঁ দিল মে প্যার মেরা " ...তাহলে তো কথাই নেই।   বাবাদের ছেলেবেলায় খুব প্রিয় ছিল " শূর্পনখার নাক কাটা যায় / উই কাটে বই চমত্কার / খদ্দের কে জ্যান্ত ধরে / গলা কাটে দোকানদার "........ মা এখনও  শুনতে চায় "ঘুম যায় ওই চাঁদ মেঘ পরীদের সাথে "......জ্যাঠার ঘরে বসে কত দুপুর কেটেছে শুধু "বসে আছি পথ চেয়ে"........ সেই কোন ছেলেবেলা থেকে শুনে আসছি "যদি জানতে চাও তুমি / এব্যাথা আমার কত টুকু / তবে বন্দি করা কোনো পাখির কাছে জেনে ...